বিগত কয়েকদিনে কাঠফাঁটা রোদের গরমের তীব্রতায় অসহনীয় হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নবাসীর জনজীবন।
একটু শীতল পরশ পেতে পুকুরের দূরন্তপনায় মেতেছে শিশুরা। রোদ আর ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এ উপজেলার শ্রমিক থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষরা।
অসহনীয় এই তাপদাহে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিন ধরেই চলছে এ অবস্থা। তবে প্রচন্ড তাপদাহে বেশি দূর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস করতে দেখা যায় লোকজনকে। এ ছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা কমে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে।
৮ মে (সোমবার) সরেজমিনে খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সূর্যের তাপ এত বেশি যে, হাঁটলেই গরম বাতাস অনুভূত হচ্ছে। অনেক কে দেখা গেছে যাত্রাপথে ছাতা মাথায় দিয়ে গরম কমানোর চেষ্টা করছে। আবার অনেক জায়গায় দেখা গেছে লোডশেডিংও অতিষ্ঠ জনগণ। জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিন নিয়মিত কমপক্ষে এক ঘন্টায় লোডশেডিং এ ভুগছেন জনগণ। গরমে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে রিতীমতো বিপাকে পড়েছে পরিবারের লোকজন। তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচতে লেবুর শরবত ও খাবার স্যালাইন কেনার হিড়িক পড়েছে। ইলেকট্রনিক দোকান গুলোতে দেখা গেছে ফ্যান বিক্রি বেড়ে গেছে অনেকটা। আর ফুটফাটে দেখা গেছে হাতপাখা ও বিক্রি হচ্ছে বেশ।
সোমবার দিনের একাংশে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায় গাছের ছায়ায় খেটে খাওয়া কয়েকজন মানুষ লাইন ধরে বসে আছেন। কারও গলায় গামছা পেঁচানো। কিছুক্ষণ পরপর গাঁ মুছছে। কেউবা টিউবওয়েল এর কাছে গিয়ে মাথার মধ্যে পানি দিচ্ছে। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে শিশুরা লাফ দিয়ে নিচে পড়ছে। কেউ কেউ শরীর ডুবিয়ে রাখছে নদী কিংবা পুকুরের পানিতে।
তেমনি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেয়া কয়েকজন দিনমজুর বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে কাজ হাতে উঠছে না। সকালে কাজে আসছি কিন্তু দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না। তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছি।’
শাহজালাল নামের একজন কৃষক বলেন, তীব্র গরমের মাঝে ধান কাটতে যেয়ে অবস্থা একেবারে নাজেহাল। ঠান্ডা পানির সাথে খাওয়ার স্যালাইন মিশিয়ে পান করলেও স্বস্তি মিলছে না।
নাম অনিচ্ছুক এক অটোচালক জানান, সকালে বের হয়েছেন। এত গরমে আর পারছেন না। তাই গাছের ছায়ায় একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে বসা ছিলেন আরেকজন দিনমজুর, তাঁর সাথে আলাপ করতে চাইলে নিজেকে অনেকটা ক্লান্ত বলে জানান তিনি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।